Sources of Minerals|Minerals Deficiency Diseases
খনিজ লবণের উৎস
অভাবজনিত ও আধিক্যজনিত রোগের নাম
![]() |
Minerals in nutrition |
খনিজ লবণ মানবদেহে বিভিন্ন ভাবে কাজ করে থাকে। ভিটামিনের মত খনিজ লবণের ও যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে মানবদেহে। শারীরিক চাহিদা অনুযায়ী খনিজ লবণ কে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। ম্যাক্রো এলিমেন্ট বা প্রধান খনিজ উপাদান এবং মাইক্রো এলিমেন্ট বা গৌণ খনিজউপাদান।
Minerals in nutrition
পুষ্টিতে খনিজ লবণ
Macro elements (অপরিহার্য খনিজ লবণ)
অপরিহার্য খনিজ লবণ বা মুখ্য খনিজ উপাদান: যে সমস্ত খনিজ লবণ দেহের বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য আবশ্যক তাদের ম্যাক্রো এলিমেন্টস বলে।
Sources of Minerals
Minerals Deficiency Disease
ক্যালসিয়াম (Calcium)
ক্যালসিয়ামের উৎস:
উদ্ভিজ্জ উৎস:- বিভিন্ন প্রকার শাক সবজি, ডাল, মটরশুটি, তিল বীজ, রাগী, বিন ইত্যাদি
প্রাণিজ উৎস:- চুনো মাছ, গরুর দুধ, মহিষের দুধ, দই, চিজ, ডিম, ইত্যাদি। এগুলির মধ্যে চুনো মাছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়।
ক্যালসিয়ামের অভাবজনিত রোগ:- ক্যালসিয়ামের অভাবে টিট্যানি, অস্টিওপোরোসিস, অস্টিওম্যালেসিয়া, রিকেট প্রভৃতি রোগ হতে পারে।
ক্যালসিয়ামের আধিক্যজনিত রোগ:- হাইপারক্যালসেমিয়া, বৃক্কে পাথর, রক্ত তঞ্চন ব্যাহত হয়।
পটাশিয়াম (Potassium)
পটাশিয়ামের উদ্ভিজ্জ উৎস:- ডাল, লেবু, পালং শাক, পেঁপে,
পটাশিয়ামের প্রাণীজ উৎস:- দুধ, ডিম, ভেড়ার মাংস
পটাশিয়ামের অভাবজনিত রোগ:-
হাইপোক্যালেমিয়া:- মাংস পেশিতে টান ধরে, অবসাদ দেখা দেয়, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন দেখা দেয়, এছাড়াও কোষ্ঠ্যকাঠিন্য, মাংস পেশির দুর্বলতা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়।
পটাশিয়ামের আধিক্যজনিত রোগ:-
হাইপারক্যালেমিয়া:- তৃষ্ণা বৃদ্ধি পায়, বমি ভাব হয়, প্যারালাইসিস, মাংস পেশির দুর্বলতা দেখা দেয়, এছাড়াও, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, কিডনির দুর্বলতা ইত্যাদি সমস্যার সৃষ্টি হয়।
সোডিয়াম (Sodium)
সোডিয়ামের উৎস: এটি আমরা সাধারণত খাদ্য লবণ হিসেবে গ্রহণ করি। তাছাড়াও
উদ্ভিজ্জ উৎস:- শাকসবজি, গম, গাজর
প্রাণীজ উৎস:- মাংস, মাখন, দুধ
সোডিয়ামের অভাবজনিত রোগ:-
হাইপোন্যাট্রেমিয়া:- এই রোগে দেহে বমি ভাব দেখা যায়, মাথা ধরে, অবসাদ দেখা দেয়। এছাড়াও সোডিয়ামের অভাবে পেটের অসুখ, কিডনির অসুখ, স্নায়ুর সমস্যা ইত্যাদি নানান সমস্যার সৃষ্টি হয়।
সোডিয়ামের আধিক্যজনিত রোগ:-
হাইপারন্যাট্রেমিয়া:- এই রোগটি হলে অত্যধিক তৃষ্ণা পায়, অবসাদ দেখা দেয়,
ম্যাগনেসিয়াম (Magnesium)
ম্যাগনেসিয়ামের উৎস:
উদ্ভিজ্জ উৎস:- সবুজ শাকসবজি, গম, বাদাম, সয়াবিন, কুমড়োর বীজ ইত্যাদি
প্রাণীজ উৎস:- মাংস, দুধ, ডিম ইত্যাদি।
ম্যাগনেসিয়ামের অভাবজনিত রোগ:- পেশির দুর্বলতা, টিট্যানি, অসম্পূর্ণ বৃদ্ধি, খিচুনি, অনেক সময় বৃক্কে পাথর জমে।
ম্যাগনেসিয়ামের আধিক্যজনিত রোগ:- বমি বমি ভাব হয়, থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা সৃষ্টি হয়, প্রস্রাবের সমস্যা,
লোহা (Ferrous):
লোহার উৎস:
উদ্ভিজ্জ উৎস:- পালং শাক, সয়াবিন, ধনেপাতা, তরমুজ, করলা, কুমড়ো, উচ্ছে, তিল বীজ ইত্যাদি।
প্রাণীজ উৎস:- মাছ, মাংস, ডিম, যকৃৎ, দুধ ইত্যাদি
লোহার অভাবজনিত রোগ:- রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ হ্রাস পায়। ঘন ঘন হাই ওঠে, টিট্যানি, গর্ভাবস্থায় ভ্রূণের অপমৃত্যু, রক্তাল্পতা দেখা দেয়, দেহের অনাক্রম্যতা হ্রাস পায় ইত্যাদি নানান সমস্যা লোহার অভাবে হয়ে থাকে।
লোহার আধিক্যজনিত রোগ:- সিডারোসিস, যকৃতে সিরোসিস হয়। এছাড়াও হিমোক্রোমাটোসিস হয় অর্থাৎ প্লীহা, অগ্ন্যাশয়, ত্বক ও অন্যান্য অঙ্গে সঞ্চিত হলে যে রোগ হয় তাকে হিমোক্রোমাটোসিস বলে।
ক্লোরিন (Chlorine):
ক্লোরিনের উৎস: ক্লোরিনের মূল উৎস হল খাদ্য লবণ।
ক্লোরিনের অভাবজনিত রোগ:- বৃক্কের কাজে ঘাটতি হয়, গ্রীষ্ম কালে অতিরিক্ত ঘাম নিঃসরণ হয়, পেশিতে টান ধরে, ব্যাথা হয়, ডায়ারিয়া, দুর্বলতা,
ক্লোরিনের আধিক্যজনিত রোগ:- শোথ দেখা যায়, হাইপারটেনশনে আক্রান্ত রোগীরা অত্যধিক খাদ্য লবণ গ্রহণ করলে তাদের রক্তের চাপ বৃদ্ধি পায়।
ফসফরাস (Phosphorus)
ফসফরাসের উৎস:
উদ্ভিজ্জ উৎস:- ডাল, বাদাম, ভুট্টা, গম, সয়াবিন ইত্যাদি।
ফসফরাসের প্রাণীজ উৎস:- দুধ, ডিম, মাছ, মাংস ইত্যাদি
ফসফরাসের অভাবজনিত রোগ:- ফসফরাসের অভাবে অস্থি, দাঁত ও কোষের সুষম বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। রিকেট, দন্ত ক্ষয়, টিট্যানি প্রভৃতি রোগ হয়।
আধিক্যজনিত রোগ:- হৃদ রোগ এবং বৃক্কের রোগ সৃষ্টি করে।
সালফার (Sulphur)
সালফারের উৎস:
উদ্ভিজ্জ উৎস:- বাঁধাকপি, খেজুর, শাকসবজি, বাদাম ইত্যাদি।
প্রাণীজ উৎস:- মাছ, মাংস, দুধ, ডিম
সালফারের অভাবজনিত রোগ:- সালফারের অভাবে কার্বোহাইড্রেট বিপাক ব্যাহত হয়।
সালফারের আধিক্যজনিত রোগ:- অ্যালার্জি সৃষ্টি হয় এবং বৃক্কের কার্যকারিতা নষ্ট করে।
Micro elements (অনপরিহার্য খনিজ লবণ)
অনপরিহার্য খনিজ লবণ বা গৌণ খনিজ উপাদান: যে সমস্ত খনিজ লবণ দেহের বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য খুব স্বল্প পরিমাণে প্রয়োজন হয় তাদের মাইক্রো এলিমেন্টস বলে।
আয়োডিন (Iodine)
আয়োডিনের উৎস: খাদ্য লবণের মধ্যে আয়োডিন পাওয়া যায়। এছাড়াও
উদ্ভিজ্জ উৎস:- সবুজ শাকসবজি এবং কন্দ জাতীয় সবজির মধ্যে আয়োডিন পাওয়া যায়।
প্রাণীজ উৎস:- সামুদ্রিক মাছ, কড মাছের তেল, দুগ্ধ জাত খাদ্য, মাংস, ডিম গুগলি ইত্যাদি।
আয়োডিনের অভাবজনিত রোগ:- গলগন্ড, মিক্সিডিমা, ক্রেটিনিজম।
আয়োডিনের আধিক্যজনিত রোগ:-
হাইপারথাইরয়েডিজম:- অত্যধিক পরিমাণে আয়োডিনের ফলে হাইপারথাইরয়েডিজম হয়ে থাকে।
Minerals related disease
মিক্সিডিমা:- বয়স্কদের ক্ষেত্রে দেখা যায় এই রোগটি হলে মুখমন্ডল ফুলে যায়, গলার স্বর কর্কশ হয়ে যায়, কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়, মাথার চুল ঝরে পড়ে, চোখের চামড়া ঝুলে পড়ে।
ক্রেটিনিজম:- শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায় এই রোগের কারণে চামড়া খসখসে হয়ে যায়, মুখ থেকে লালা নিঃসরণ হয়, শিশু জড়বুদ্ধি সম্পন্ন হয়।
তামা (Copper)
তামার উৎস:
উদ্ভিজ্জ উৎস:- গাজর, কলা, বাদাম, ডাল
প্রাণীজ উৎস:- মাছ, মাংস, ডিম, দুধ
অভাবজনিত রোগ:- অস্থি ভঙ্গুর হয়, ত্বক ও চুলের রঙের পরিবর্তন হয়, হিমোগ্লোবিন গঠন ব্যাহত হয়।
আধিক্যজনিত রোগ:- লিভার সিরোসিস, মাথা ধরা, চুল পড়া, স্নায়ু দৌর্বল্যতা
দস্তা বা জিংক (Zinc)
জিংকের উদ্ভিজ্জ উৎস:- কমলালেবু, তৈলবীজ, দানাশস্য
জিংকের প্রাণীজ উৎস:- খোল যুক্ত ঝিনুক, যকৃৎ মাংস, ডিম।
ফ্লুরিন (Fluorine)
ফ্লুরিনের উৎস:- ফ্লুরিনের প্রধান উৎস হল পানীয় জল। এছাড়াও সামুদ্রিক মাছ, পনির, শাকসবজি।
ফ্লুরিনের অভাবজনিত রোগ:- দন্তক্ষয় ঘটে।
ফ্লুরিনের আধিক্যজনিত রোগ:- ফ্লুরিন যেমন দাঁতের ক্ষয় প্রতিরোধ করে তেমনি আবার এর পরিমাণ বেশি হলে দাঁতের ক্ষতি হয়। দাঁতের এনামেল নষ্ট হয়ে যায়, দাঁতের ওপর ছোপ ছোপ দাগ পড়ে, দাঁতের ওপর গর্ত সৃষ্টি হয়। এছাড়াও মেরুদন্ড শক্ত হয়ে যায়।
tags:
minerals
nutrition
food
class 11
1 Comments
please vitamin ar opor ae dhoronar akta note create korle khub help hoto
ReplyDeletePlease do not enter any spam link in the comment box.