Role of food in maintenance of physical health
Role of food in our health
স্বাস্থ্যরক্ষায় খাদ্যের ভূমিকা
স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য এবং সুস্বাস্থ্য গড়ে তোলার জন্য খাদ্যের ভূমিকা অনস্বীকার্য। খাদ্য মানব দেহের শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
স্বাস্থ্য রক্ষায় খাদ্যের ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো -
A) শারীরিক স্বাস্থ্য রক্ষায় খাদ্যের ভূমিকা -
I) তাপ শক্তি উৎপাদনে খাদ্যের ভূমিকা:-
জীবদেহের সকল জৈবিক ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজন শক্তি এবং এই শক্তির মূল উৎস হল খাদ্য। আমরা যে সমস্ত খাদ্য গ্রহণ করি তাদের মধ্যে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন এবং ফ্যাট এই তিন ধরনের খাদ্য মানব দেহের মধ্যে শ্বসন প্রক্রিয়ায় দেহকোশে জারিত হয়ে খাদ্যস্থ স্থৈতিক শক্তি তাপ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। এই তাপ শক্তি দেহের সকল জৈবনিক ক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। সুতরাং, খাদ্য আমাদের প্রয়োজনীয় সকল শক্তির যোগান দেয়।
II) দৈহিক বৃদ্ধি ও ক্ষয় পূরণে খাদ্যের ভূমিকা:-
খাদ্য দেহের বৃদ্ধি ও ক্ষয় পূরণে মুখ্য ভূমিকা পালন করে দেহের বৃদ্ধি ও ক্ষয়পূরণে প্রোটিন ও খনিজ লবণ বিশেষভাবে কাজ করে। দেহের বিভিন্ন অঙ্গ যেমন পেশী, অস্থি ইত্যাদি গঠনে প্রোটিন জাতীয় খাদ্য একান্ত প্রয়োজন। এছাড়াও বিভিন্ন খনিজ লবণ যেমন লোহা ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস রক্ত ও অস্থিকলা গঠনের সাহায্য করে।
III) রোগ প্রতিরোধে খাদ্যের ভূমিকা:-
রোগ প্রতিরোধে ভিটামিন ও খনিজ লবণ বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
a) ভিটামিনের ভূমিকা:- রোগ জীবাণুর আক্রমণ থেকে দেহকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে খাদ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দেহ সংরক্ষক খাদ্য উপাদানের অন্তর্গত ভিটামিন, রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে, জেরথ্যালমিয়া, কেরাটোম্যালেশিয়া, স্কার্ভি ইত্যাদি বিভিন্ন রোগ গুলিকে ভিটামিন প্রতিরোধ করে।
b) খনিজ লবণের ভূমিকা:- ভিটামিনের পাশাপাশি খাদ্যের আরো একটি উপাদান খনিজ পদার্থ যা বিভিন্ন প্রকার রোগ প্রতিরোধে অংশ নেয়। যেমন,গলগন্ড, অস্টিওম্যালেসিয়া, রিকেট ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের রোগ খনিজ পদার্থের সাহায্যে প্রতিরোধ করা যায়।
IV) শারীরবৃত্তীয় কার্যাবলী নিয়ন্ত্রণে খাদ্যের ভূমিকা:-
দেহের বিভিন্ন শরীরবৃত্তীয় কার্যাবলী নিয়ন্ত্রণে খাদ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জল, ভিটামিন ও খনিজ লবণ ইত্যাদি বিভিন্ন খাদ্যের উপাদানগুলি দেহের বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়া, যেমন - পরিপাক, রেচন, দেহের তাপ নিয়ন্ত্রণ, ইলেকট্রোলাইটের সমতা রক্ষা প্রভৃতি নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
B) মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় খাদ্যের ভূমিকা -
খাদ্য মানব জীবনে মানসিক রসনা ও তৃপ্তিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। খাদ্য পুষ্টিকর হলেও অনেক সময় প্রকৃত মানসিক রসনা তৃপ্তি দিতে পারে না। একজন ব্যক্তি নিজের বাড়ি ছেড়ে দূরে কোথাও গিয়ে থাকলে প্রথমদিকে সেখানকার খাদ্যের সঙ্গে মানিয়ে নিতে তার অসুবিধা হয়, যা অনেক সময় তার স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে।
অতএব এর থেকে বোঝা যায় যে মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় খাদ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে।
C) সামাজিক স্বাস্থ্য রক্ষায় খাদ্যের ভূমিকা -
সামাজিক দিক থেকেও স্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে খাদ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের সমাজে প্রচলিত বিভিন্ন ধরনের সংস্কৃতিক বা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ভোজনের ব্যবস্থা করা হয়। বিবাহ, জন্মদিন, শ্রাদ্ধানুষ্ঠান, পূজার্চনা প্রভৃতিতে খাদ্য বিশেষ মাত্রা এনে দেয়। খাদ্যের বিভিন্নতা এবং নির্বাচন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাত্রাকে ও সামাজিক স্বাস্থ্যকে নির্দেশ করে।
0 Comments
Please do not enter any spam link in the comment box.