Problems due to defective feeding habit of infants || Causes of dental caries || শিশুর ত্রুটিপূর্ণ আহারজনিত সমস্যা

শিশুর ত্রুটিপূর্ণ আহারজনিত সমস্যা

Problems due to defective feeding habit of infants

Cause of dental caries

Problems due to defective feeding habit of infants


ত্রুটিপূর্ণ আহার জনিত কারনে শিশুদের কী কী রোগ দেখা যায়?

অথবা

শিশুর ত্রুটিপূর্ণ আহারজনিত সমস্যাগুলি আলোচনা করো

অথবা

শিশুদের দন্ত ক্ষয়ের কারণ প্রতিকারের ব্যবস্থাগুলি লেখ

অথবা

শিশুর আহারজনিত সমস্যাগুলি লেখো

ওপরের সব প্রশ্নগুলির একটাই উত্তর, যেটি নীচে লিখে দেওয়া হয়েছে

উত্তর -

শিশুর ত্রুটিপূর্ণ আহারজনিত সমস্যা:-ত্রুটিপূর্ণ আহারজনিত কারণে শিশুদের নানান সমস্যা দেখা যায়। সেগুলি নিম্নে আলোচনা করা হলো -

I. দন্তক্ষয়:- শিশুর মুখের মধ্যে জীবাণুর ক্রিয়ায় দাঁতের ক্যালসিফায়েড কলা আক্রান্ত হয় এবং দন্তক্ষয় সৃষ্টি হয়।

দন্তক্ষয়ের কারণ:-

a. শিশুদেরকে দুধ পান করানোর পর মুখ না ধোয়ালে মুখের মধ্যে জীবাণু সংক্রমণ ঘটে দন্ত ক্ষয় ঘটে।

b. শিশুদের মধ্যে মিষ্টি, ক্যান্ডি, টফি প্রভৃতি চটচটে শর্করা জাতীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতা থাকে ওই সমস্ত খাদ্যগুলি খাওয়ার পর ভালোভাবে মুখ পরিষ্কার না করলে দাঁতের ফাঁকে ওই খাদ্যগুলি আটকে যায়। ফলে বিভিন্ন প্রকার ব্যাকটেরিয়া যেমন স্ট্রেপটোকক্কাস, ল্যাকটোব্যাসিলাস প্রভৃতি আটকে থাকা খাদ্যবস্তুর উপর দ্রুত বংশ বৃদ্ধি করে এবং একপ্রকার অ্যাসিড উৎপন্ন করে পরবর্তীকালে ওই অ্যাসিড ডিমিনারেলাইজেশন ঘটিয়ে দন্তক্ষয়কে ত্বরান্বিত করে।
c. প্রতিটি শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সমান হয় না ফলে মুখের মধ্যে জীবাণুর আক্রমণে মাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ধীরে ধীরে দাঁতের মধ্যে ক্ষয় শুরু হয়।

দন্তক্ষয় প্রতিরোধ:-

a. শিশুকে দুধ পান করানোর পর কিছুটা জল পান করালে দাঁতের গোড়াগুলি ধুয়ে যাবে ফলে জীবানু বংশবিস্তার করতে সুযোগ পাবে না।
b. শিশুদের উপযুক্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম জাতীয় খাদ্য এবং ভিটামিন A, C ও D সমৃদ্ধ খাদ্য খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
c. শিশুর দাঁতের ক্ষয় শুরু হয়েছে কিনা সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখার জন্য প্রতি ছয় মাস অন্তর দাঁতের ডাক্তার দেখিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।
d. রাত্রে শোয়ানোর আগে সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করে দাঁত ব্রাশ করাতে হবে।
e. শিশু যাতে চকোলেট এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার খুব বেশি না খায় সে বিষয়ে নজর রাখতে হবে।

II. উদরাময়:- উদরাময় হল একটি জীবাণু ঘটিত রোগ এর কারণ হলো শিশুকে খাদ্য পরিবেশন করার আগে পাত্রকে জীবাণুমুক্ত করে না নিলে সেই জীবনু শিশুর দেহে সংক্রমণ ঘটায় এবং খাদ্যদ্রব্য সংক্রমিত থাকলে সেই সেই খাদ্য থেকে শিশুর দেহে রোগের সৃষ্টি হয়।
উদরাময় প্রতিরোধ:- শিশুকে খাবার দেওয়ার আগে ভালোভাবে হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে এবং বাসনপত্র গরম জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে।

III. কোষ্ঠকাঠিন্য:- শিশুদের তন্তু জাতীয় খাদ্য এবং জল কম পরিমাণে খাওয়ালে শিশুদের মধ্যে তীব্রভাবে এই সমস্যা দেখা যায়।
প্রতিরোধ:- এই সমস্যার সমাধানের জন্য ছয় মাস বয়সে শিশুকে প্রতি কেজি দৈহিক ওজনের জন্য কমপক্ষে 50 মিলি লিটার জল পান করানো উচিত। শিশুকে ফলের রস, সবজির জুস, গ্লুকোজের দ্রবণ ইত্যাদি দিতে হবে এবং শিশুর বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে দানাশস্য, ফল ও সবজি প্রভৃতি দেওয়া উচিত।

IV. পেটে বায়ু:- মায়ের একটি স্তন দীর্ঘক্ষণ ধরে বা বোতলের চুষিকাঠির রবারের ছিদ্রটি বড়ো হলে শিশুর পেটে বায়ু প্রবেশ করে।
প্রতিকার:-
a) উভয় স্তন থেকে শিশুকে মাতৃদুগ্ধ পান করানো।
b) চুষিকাঠির ছিদ্র বড়ো হলে নতুন ছোট ছিদ্রযুক্ত চুষিকাঠি ব্যবহার করা।

V. পেট ব্যথা:- শিশুর পেটের মধ্যে অধিক পরিমাণে গ্যাস জমলে অন্ত্রের উপর চাপ সৃষ্টি করে ফলে শিশু পেট ব্যথা অনুভব করে। এছাড়া দুধের প্রোটিন ও ল্যাকটোজ সঠিকভাবে পাচিত ও শোষিত না হলে শিশুর অন্ত্রে ব্যথা অনুভূত হয়।
প্রতিরোধ:- এই সমস্যা সমাধানের জন্য অ্যালকোহল বর্জিত গ্রেপ ওয়াটার খাওয়াতে হবে। এছাড়া সঠিক সময়ে শিশুকে মাতৃদুগ্ধ থেকে বঞ্চিত করতে হবে।

VI. শিশুর বৃদ্ধিজনিত ব্যর্থতা (FTT):- শিশুর বৃদ্ধিতে ব্যর্থতাজনিত সমস্যাকে Faliure To Thrive বলা হয়।
কারণ:
a) শিশুর প্রতি মায়ের অযত্ন
b) মায়ের অজ্ঞতা
c) শিশুর কম খাদ্যগ্রহণ
d) শিশুর খাদ্য সহ্য না হওয়ার কারণে অপুষ্টি
প্রতিকার:
a) নিয়মিত শিশুর ওজন পরিমাপ করা।
b) শিশু চাওয়ামাত্র তাকে দুধ পান করাতে হবে।

VII) GOR ঘটিত সমস্যা:-

কারণ:-
a) আন্ত্রিক গোলযোগ এবং পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা।
b) খাওয়ানোর সময় সঠিক অবস্থান বজায় না রাখা।
সমস্যা:-
a) শিশু খাবার পর বমি করে উগরে দেয়।
b) শিশু বুকের মধ্যে জ্বালা অনুভব করে।
c) কখনো কখনো বমির সঙ্গে রক্তক্ষরণ হয়।
প্রতিকার:-
a) পেট পরিষ্কার রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
b) শিশুকে ঘন করে ফর্মুলা ফুড দিতে হবে।
c) খাওয়ানোর সময় সঠিক অবস্থান।
d) পরিমাণ মতো খাদ্য প্রদান।

VIII) খাদ্য অ্যালার্জি:- অনেক সময় কিছু খাদ্য, যেমন - প্রাণীর দুধ, ডিম, বাদাম, বেগুন ইত্যাদি গ্রহণের ফলে অ্যালার্জি দেখা দেয়। তখন ওই সমস্ত খাদ্য গ্রহণ শিশুকে প্রদান করলে শিশুর শারীরিক প্রদাহ ও অন্যান্য সমস্যা দেখা দেয়। এক্ষেত্রে ওইসমস্ত খাদ্যগুলিকে বর্জন করতে হবে।

বিঃদ্রঃ-
[ শিশুর দন্তক্ষয়ের কারণ ও প্রতিকারের ব্যবস্থাগুলি লেখো - এই প্রশ্নের উত্তরটির জন্য শুধুমাত্র I নাম্বার পয়েন্টটি পুরো লিখতে হবে। অর্থাৎ, দন্তক্ষয় থেকে উদরাময় এর আগে পর্যন্ত। ]


tags:
hs nutrition
nutrition notes
nutrition long question answer
Reactions

Post a Comment

0 Comments